Ads

সঠিকভাবে সন্তান লালান-পালনের ৮ টি উপায়

।। সালমা তালুকদার ।।

বেশি নিয়মের বেড়াজালে নিজেও আটকে যাবেন না…আপনার শিশুকেও আটকানোর চেষ্টা করবেন না প্লিজ…শিশুকে শিশুর মত বেড়ে উঠতে দিন…শুধু খেয়াল রাখবেন তার চারপাশে কারা আছে….কাদের কথা সে বেশি শুনছে…কারো দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে কিনা….আপনি যদি সত্যিকার অর্থে মা অথবা বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকেন অর্থাৎ অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন থাকেন তবে অবশ্যই আপনার সন্তানের আচরণ পরিবর্তন আপনার নজরে আসবে….তখন লাগাম টানতে সহজ হবে বৈকি…আপনার সন্তান আপনার শরীরের অংশ….আপনি না চাইলে সে কখনোই আপনার সাথে এমন কোন আচরণ করবে না যাতে আপনি কঠিন সময়ে উপনীত হন….যদি সন্তান এমন কিছু করে থাকে তাহলে নিজের সাথে কথা বলেন….ভেবে বের করেন কি এমন করেছেন অথবা কি এমন চিন্তা করেছেন যাতে করে আজকে সন্তান আপনার বিরুদ্ধাচারণ করছে…সন্তানের সাথে আপনার সম্পর্ক সুন্দর ও স্বচ্ছ রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস হচ্ছে,

১। সন্তানের কাছে কোনকিছু গোপন রাখবেন না।

২। আপনার ইচ্ছা, অনিচ্ছা, ভালো লাগা, মন্দ লাগা, আপনার চাহিদা সবকিছু নিয়ে সন্তানের সাথে কথা বলেন।

৩। একটা কথা সব সময় মাথায় রাখবেন আপনার সন্তান আপনার শত্রু নয়। যদি কখনো মনে হয় সে আপনাকে শত্রুর মতোই দেখছে অথবা আপনি তার কাছ থেকে এমন কোন আচরণের স্বিকার হচ্ছেন, যা আপনার জন্য মনোকষ্টের কারন হয়ে দাড়াচ্ছে তাহলে সব অভিমান ভুলে তাকে কাছে ডাকেন। তার সাথে খোলাখুলি কথা বলেন। পাশে বসিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে মনে করিয়ে দেন সে আপনার সন্তান। কতটা যত্নে আপনি তাকে বড় করেছেন। ছোটবেলার কিছু স্মৃতি তার সামনে ছবির মত তুলে ধরেন।

৪। সন্তান ভুল করবেই। আমরাই কি কম ভুল করি বলেন। আর সে তো প্রতিটা বয়সে একটা করে চ্যালেন্জ মোকাবিলা করছে। তার ভুলগুলো সম্পর্কে তার সাথে কথা বলেন। প্রতিনিয়ত পোক করেন। দেখবেন একসময় সে বুঝবে যে তার কাজ সঠিক নয়।

লেখকের আরও লেখা পড়ুন-সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালে মাদের করনীয়

৫। তবে সন্তান লালন পালনে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হচ্ছে, আপনার নিজের আচরণ। আপনি যদি সন্তানের সামনে অন্যের সমালোচনা, দোষ নিয়ে কথা বলেন তাহলে সন্তানের বুঝের জায়গা পোক্ত হলে আপনাকে সে মানতে চাইবে না। কারন তখন তার বোঝার জায়গাটা স্বচ্ছ হবে যে, অন্যের সমালোচনা করতে হয় না। কিন্তু তার অভিভাবক তার সামনে এসবকিছু করেছে।

৬। সন্তান জন্মের পরই আপনার দায়িত্ব শুরু হয়ে যায়। সুতরাং সন্তান নেয়ার আগে চিন্তা করবেন লালনপালন করতে পারবেন কিনা। বিষয়টা কিন্তু সহজ নয়। ভীষন কঠিন দায়িত্ব এই সন্তান লালনপালন।

৭। সন্তানের সামনে কখনো কোনকিছু নিয়ে হায় হুতাস আফসোস করবেন না। ছোটবেলা থেকেই তাকে শেখাবেন, জীবনে যা কিছু ঘটে তা মেনে নিতে হবে। তবে মনে প্রাণে সব সময় ভালো চিন্তা করতে হবে। তাহলে নিজের জীবনে ভালোকিছু হবে ইনশাআল্লাহ। এতে করে ছোটবেলা থেকেই সে একটা পজিটিভ মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠবে।

৮। মনে রাখবেন, একবার সন্তানের অভিভাবক হয়ে গেলেন তো প্রতিনিয়ত শোধরানোর কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। আপনার চলন বলন সবকিছু আপনার সন্তান ফলো করবে। আপনি মুখে বলবেন একটা আর আচরণে প্রকাশ করবেন আরেকটা এতে করে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পরবে। কারন তারা মুখ ফুটে বলবে না কিছু, নিজেদের মত কিছু একটা বানিয়ে ঐ পথে চলবে। যে পথে সত্য মিথ্যা পাশাপাশি চলছে। একসময় সত্য সরে গিয়ে মিথ্যা তার সঙ্গী হয়ে যাবে।

সবশেষ কথা হচ্ছে প্রতিনিয়ত নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করেন। আপনার চারপাশের পরিবেশ এমনিতেই আপনার অনুকূলে চলে আসবে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আনেন। কোথায় যাবেন, কার সাথে মিশবেন, কতটুকু মিশবেন, মিশবেন কিনা এবং এসবকিছু আপনার পরিবারের সাথে শেয়ার করার মত সাহস আছে কিনা। হুজুগে নাচলে জীবনটা হুজুগেই যাবে। বেলা শেষে সৃষ্টিকর্তাকে দোষ দিয়ে লাভ নাই। কারন আপনার পুরো জীবনের ভালো মন্দ সুখ অসুখ সবকিছুর জন্য আপনি নিজে দায়ী। আপনার জীবনের প্রনেতা আপনি নিজে।

লেখকঃ সালমা তালুকদার, স্পেশাল এডুকেটর

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সমাজ,পরিবার ও আত্মউন্নয়ন মূলক অসাধারণ লেখা ও আর্টিকেল পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi এ লাইক দিন।প্রিয় লেখক!আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; প্রিয় লেখক ও পাঠক আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম এ যুক্ত হয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।

আরও পড়ুন