Ads

অসুখী দাম্পত্য জীবনে কীভাবে সুখ ফিরিয়ে আনা যায়?

মির্জা ইয়াওয়ার বেইগ

কাজটা নিঃসন্দেহে অত্যান্ত কঠিন, কারণ এর জন্য একটা পূর্বশর্ত আছে। আপনি যদি সেই পূর্বশর্তটা পূরণ করতে পারেন তাহলে অবশ্য বেশ সহজ। শর্তটা হচ্ছে, ‘আপনি কি সত্যিই চান আপনার দাম্পত্য জীবন সুখের হোক?’ কথাটি শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু আমি আমার দীর্ঘ কাউন্সেলিং জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সংসারে অশান্তির প্রধান কারণই হচ্ছে নিজেরা সত্যিকার অর্থে সুখ না চাওয়া। জীবনকে সুখময় করার ব্যাপারে তারা কেউই সচেতন ছিল না; বরং কেবল নিজেকে বা অন্যকে সন্তুষ্ট করার জন্য কিছু একটা করে বুঝ দিতে চাইছিল যে ‘তারা চেষ্টা করছে’। বাস্তবে কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা; কেননা তারা কখনোই সত্যিকার অর্থে চেষ্টা করেনি। তারা অসমাপ্ত একটা নাটকে অভিনয় করে চলেছিল মাত্র।

আপনি যদি আন্তরিকভাবে পরিবর্তন চান তাহলে আপনার জীবনসঙ্গী যা যা পছন্দ করে তার একটা তালিকা করে ফেলুন। বিয়ের প্রথম দিকে তার কী কী গুণ আপনার যথেষ্ট পছন্দের ছিল নিশ্চয়ই মনে আছে সেগুলো? আপনি তা লিখে ফেলুন। একই সাথে সমস্যার বিষয়গুলোও লিখুন। সাধানণত এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। যখন ভালো গুণগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন করি না এবং অবদানগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ হই না, তখন দাম্পত্য সম্পর্কে চিড় ধরাটাই নিয়তি। আমি প্রায়ই জিজ্ঞেস করি, ‘দিনে কতবার আপনারা ধন্যবাদ জানান? দিনে ক’বার তাকে জড়িয়ে ধরেন, চুমু খান? দিনে কতবার তাকে বলেন, আমি তোমাকে ভালোবাসি?’

অদ্ভুত একটা বিষয় হলো, আমরা জীবনসঙ্গীর কাজকে কমই মূল্যায়ন করি। অনেকেই মনে করেন, সমালোচনা না করাটাই যেন কাজের মূল্যায়ন। এমন চিন্তা একটি মারাত্মক ভুল। কারও কাজের সত্যিকার মূল্যায়ন করা মানে, সে আপনার জন্য যা করেছে তার সবকিছুর জন্য প্রত্যক্ষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞ নয়।’ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা একটি সুন্দর দাম্পত্য জীবনের প্রাণ। মনে রাখবেন, নিয়মিত এ কাজটা করা একটি দারুন ব্যাপার। কোনো সমস্যা হলে তা বলতে যদি আমরা দেরি না করি তাহলে সবকিছু সুন্দরভাবে চললে তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে কেন কার্পণ্য করব?

সূত্রঃ লেখকের “বিয়েঃ স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর” বই 

 

 

আরও পড়ুন