Ads

কিছু করার না থাকলে তিনি কী করে দেখুন

।। মুফতি মেনক ।।

এক. সময় নষ্ট করবেন না। আপনার আজ যা করা উচিত তা আগামীকাল পর্যন্ত স্থগিত করবেন না। জীবন সংক্ষিপ্ত। সময় শেষ হওয়ার আগে যতটা সম্ভব ভাল কাজ করুন। গতকাল কখনোই আগামীকাল হতে পারে না। শয়তানের কথা শুনবেন না। যদি সে আপনাকে দিয়ে পাপ করাতে না পারে তবে সে আপনাকে সময় নষ্ট করাবে৷
দুই. এমন সময় আসবে যখন পরিস্থিতি পরিবর্তনে আপনার কিছু করার থাকবে না। তখন বাস্তবতাকে গ্রহন করুন। এটি সে সময় যখন সর্বশক্তিমানের ওপর আপনাকে নির্ভর করতে হবে। তাঁর হুকুম নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকুন এবং তাঁর উপর আস্থা রাখুন।
পূনশ্চঃ
এক. নিজেকে এমনভাবে স্থির করুন যাতে সর্বশক্তিমান আপনার পথে যাই পাঠান না কেন, আপনি তাতে ভাল থাকবেন। আপনি জানেন এটি তাঁর আদেশ। আপনি জানেন কোন কিছুই স্থায়ী হয় না এবং এই জীবন কতটা অস্থায়ী।
দুই. দামি আচ্ছাদন দিয়ে নিজেকে সাজানোর চেয়ে সেরা চরিত্রের পোশাক পরা আরও বেশি আকর্ষণীয়।
তিন . ব্যথা এমন একটা কিছু যা আপনি প্রায়শই যথেষ্টভাবে অনুভব করেন। এটি আপনাকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা আপনার উপর নির্ভর করে। কেউ কেউ সত্যিই মন খারাপ করেন, জীবন নিয়ে তিক্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ তাদের পদযাত্রায় এটিকে স্বাভাবিক হিসাবে গ্রহণ করেন; এটিকে মোকাবেলা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। এর মাধ্যমে কিছু হাসি এবং কিছু বেদনা আসে। আপনার ব্যথাকে একটি ভাল উদ্দেশ্য কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। এটিকে আরও ভাল ও শক্তিশালী করতে দিন আপনাকে।
চার. সর্বশক্তিমানের সময়ের উপর আস্থা রাখুন। শুধু তিনিই জানেন কেন আপনি এতদিন এই অবস্থায় আছেন। দুশ্চিন্তা করবেন না কারণ সম্ভবত আপনার প্রার্থনার উত্তর দিতে দেরি করাটা আপনার জন্য আপনি যখন এটি চান তখন তা পাওয়ার চেয়ে উত্তম। সঠিক সময়ে বৈরি পরিস্থিতি থেকে আপনাকে বের করে আনার ব্যাপারে তাঁর উপর আস্থা রাখুন।
পাঁচ . আপনি কীভাবে লোকদের সাথে আচরণ করেন সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। সর্বশক্তিমান ভাঙা হৃদয়ের মানুষ এবং যারা জুলুমের শিকার হন তাদের কাছাকাছি থাকেন। মনে রাখবেন, আপনি যদি সহায়তা না করতে পারেন তবে আঘাত করবেন না। এটি বেঁচে থাকার একটি সাধারণ নিয়ম। অন্যদের সাথে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে অনেকে অসতর্ক থাকেন এবং কম যত্নশীল হন।
ছয়. মানুষ সবসময় অজুহাত খুঁজে। আমরা বলি আমাদের সময় নেই। তবে কীভাবে আমরা আমাদের সময় বরাদ্দ করি? আমাদের মানুষের সাথে সময় দিতে সমস্যা আছে। কিন্তু আমরা কি ভুল ধরণের লোকের সাথে মেলামেশা করছি না? আমরা মাঝে মাঝে আমাদের জীবনকে অভিশাপ দিয়ে থাকি এবং আমরা যা যা করি তার প্রতি ঘৃণা করি। সমস্যাটি হ’ল আমাদের দেওয়া জীবনকে আমরা অপচয় করি।
সাত. আমাদের মধ্যে অনেকে সদয় কাজ করতে দ্বিধা বোধ করেন কারণ আমরা সর্বদা সেই নিখুঁত মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করি। তেমন নিখুঁত কোন জিনিস নেই। যেকোন সময়ই আপনার জন্য ভাল এবং করুণা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত। সর্বশক্তিমান সম্পূর্ণতার সন্ধান করেন না। তিনি আপনার হৃদয় ও নিয়তের বিষয় দেখেন। এটাই পুরষ্কৃত হবে।
দ্রষ্টব্য:
তোমরা জেনে রেখো যে, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক গর্ব প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়। এর উপমা বৃষ্টি; যার দ্বারা উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তা পীতবর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তা টুকরা-টুকরা (খড়-কুটায়) পরিণত হয় আর পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। (সূরা আল হাদীদ: ২০);
আর আমি আ’দ ও সামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; ওদের বাড়ি-ঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান ওদের কাজকে ওদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং ওদেরকে সৎপথ অবম্বনে বাধা দিয়েছিল; যদিও ওরা ছিল বিচক্ষণ। (সূরা আন কাবুত: ৩৮);

 

অনুবাদকঃ মাসুম খলিলী,  কলাম লেখক ও সাবেক ডেপুটি এডিটর, দৈনিক নয়া দিগন্ত

…………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সমাজ,পরিবার ও আত্মউন্নয়ন মূলক অসাধারণ লেখা ও আর্টিকেল পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi এ লাইক দিয়ে ফেসবুকে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন।প্রিয় লেখক! আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; প্রিয় লেখক ও পাঠক আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম এ যুক্ত হয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।

আরও পড়ুন