Ads

মানুষের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকি

আমিরুল মোমেনিন মানিক

আমি মানুষের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকিতার ভেতরের কুকুর দেখবো বলে”এটা পশ্চিমবঙ্গের একজন বিখ্যাত কবির কবিতা। নিজেকে সফলতার সবুজ প্রান্তরেনিয়ে যেতে কে না চায় ? কিন্তু সেই অভিযাত্রায় কত যে বিষাক্তমহিজঙ্গ সাপের কামড় খেতে হয়! সেটা কেবল সাপেকাটা মানুষই জানেন। একটাসুযোগের জন্য মনুষ্য পরিচয় ভুলে কুকুর হয়ে যেতে হয়। আত্নসম্মান হারাতে হয়।সস্তাদরে বিক্রি করতে হয় নিজের নতিজা। লেগে থাকতে হয় অন্তহীন। বড় হওয়ার আগেঅনেক ছোট হতে হয়। তেলাপোকার মত। একটা সুযোগের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষাকরতে হয়। জীবনানন্দ দাস যেমন বনলতা সেনের জন্য অধীর ছিলেন। তেমনটি। তবে, পরাজিত হলেই বিপদ। কারণ এখানে পরাজিত মানেই পাপী। রাম যদি হেরে যেত রাবন দেবতা হতো- এটাই তো নিয়ম।

আমার তরুণ বন্ধুরা মাঝে মাঝেই হতাশ হয়ে যায়। মানিক ভাই, আর পারছি না, অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু কোন সুযোগই পাচ্ছি না। আমি তাদেরকে ফিনিক্স পাখির মতো জাগিয়ে তুলি। বলি, ভয় পাসনে, আমার বন্ধু এম এ মুহিত এভারেস্টে উঠতে পারলে তোরা কেন জীবনের বাঁকা পথটায় লাথি মারতে পারবি না।
আমি তরুণদের অনুপ্রাণিত করছি। সংকট কেঁটে যাবে। রোদ্দুরে ভরে যাবে আঙ্গিনা। যারা আজ উদ্ধত, নূহের প্লাবনে তারা ভেসে যাবে। বিনয়ীরা, বিপ্লবীরাই টিকে থাকবে।

আমি নিজে একজন রেভ্যুলেশনারী। বিপ্লবী । নিজের ভেতরের আলোকে প্রতিনিয়তছড়িয়ে দেয়াকে, নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ধ্যানকে আমি বিপ্লব মনে করি।যেমন: আমি আমার লেখালেখি, সঙ্গীত নিয়ে প্রতিনয়ত বিপ্লব করছি। নিরন্তর ছুটেচলছি। একজন ফসলী জমির কৃষকের মতো। পরশ্রীকাতররা এজন্য সমালোচনাও করেন।আন্তরিক সমালোচনাকে স্যালুট। তবে, হিংসাত্নক বিদ্রুপকে লাথি দেই সজোরে।
আমার সমবয়সী বা অনুজদের বলছি, আসুন নিজেকে প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কারণ, নিজে বড় না হলে, আপনি সমাজের অপাংক্তেয় ছাড়া আর কি!

আমার কোটি কোটি টাকা নেই। তবে, অন্যের কাছে সাহায্য চাইনা কখনোই। শুধুনিজের অবস্থানটুকুর প্রাপ্য সম্মানের জন্য লড়াই করি। অঢেল টাকা নেই বলেইহয়ত স্বপ্ন দেখতে পারি এখনও। নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারি। গান, কবিতা নিয়েভাবতে পারি। যাদের অনেক সম্পদ আছে;মাবুদ তাদেরকে বধির করে দিয়েছেন সম্ভবত।স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কোন নজির দেখিনা তাদের মধ্যে। কাজী নজরুল ইসলাম যেসময়ে জন্মেছিলেন, সেই সময়ের শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তির নাম জানতে খবু ইচ্ছে করে।তিনি আজ কোথায় ? কেউ কি তাকে স্মরণে রেখেছে ? অথচ, দরিদ্রতাই মহান করেতুলেছিল লেটো দলের সেই দুখু মিয়াকে।

 “লেগে থাক বেটা। লেগে থাক। একটা কিছু হবেইআমার এক বড় ভাই প্রায়ই এ কথা বলেন। আমি হাসি। হাসতে থাকি তার কথা শুনে। কিন্তু বুকের ভেতর ইচ্ছা পাখিটা ডানা ঝাপটে উঠে। কু্‌উক করে ডাক দেয়। আর বলে, পরাজিত হবার জন্য আসিনি। জিতবই। তবেই ঘরে ফিরবো।( যারা বড় হবার জন্য লড়াই করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে )

লেখক- কণ্ঠশিল্পী,সাহিত্যিক এবং প্রধান নিউজ এডিটর, চেঞ্জ টিভি

আরও পড়ুন