মনিরা ইসলাম
শিশুর জন্য সুন্দর একটা শৈশব পাওয়ার ব্যবস্হা করা হলো মা বাবার একটা বড় উপহার। এই শৈশব নিশ্চিত করতে শুধু শৈশব নির্মাণ ভাবনা পারতে হয়, কৌশল জানতে হয়।
অন্য প্রাণীর বাচ্চাদের সাথে মানুষের বাচ্চার তফাৎ নাই। তর্ক করার জন্য বলতে পারি ওরা বনে বাদাড়ে থাকে…. । বুলবন ওসমান রচিত ‘উটকো’ আমার খুব পছন্দের একটা বই। দেশে গেলে বাবার বইয়ের আলমারিতে না পেলে আবার কিনতে চেষ্টা করব। পঁয়ত্রিশ বছর আগের পড়া একটা বই খুঁজবো পাবো কি না বলতে পারছি না।
উটকো জঙ্গলে কুকুরদের/ নেকড়ের (মনে নাই) কাছে বড় হয়েছিল। ওর ভাইদের নাম ছিল টিকা মাকা। চমৎকার একটা গল্প। অনেক চেষ্টার পর উটকোর মানুষ বাবা মা তাকে খুঁজে পেয়েছিলেন।বড় হলেও উটকো নেকড়ের মতো হামাগুড়ি দিতো।কথা শিখেনি। এখানে দুটা জিনিস পাচ্ছি। শিশুর উপর পরিবেশের প্রভাব আর শিশু যে প্রকৃতির অংশ সেটা।
কারো ইচ্ছা হলে নাম আর লেখকের নাম দিয়ে বইটা খুঁজে দেখবেন। আমি স্কুলে (কোন ক্লাস মনে নাই) কবিতা আবৃত্তি করে এই বইটা পুরষ্কার পেয়েছিলাম।
তখন যে বইগুলো ছিল সেসব কি পাওয়া যায়?
আমি পড়েছিলাম ‘সাত পাঁচ গল্প’ – মোহাম্মদ নাসির আলী। রুশ দেশের উপকথা, গোপালভাড়ের বইগুলো, মোহাম্মদ নাসির আলী তখন বাচ্চাদের জন্য অনেক বই লিখেছিলেন। সব বই ছয় থেকে বারো বছরের বাচ্চাদের জন্য খুব ভালো হবে। টুকটাক কত যে ছন্দ কবিতার অংশ বিশেষ মনে আছে। লুৎফর রহমান রিটন এর লেখা কবিতার অংশ:
পোটলের খালুও তো কাজে খুব চালুনখ দিয়ে ছিলে ফেলে বগুড়ার আলু।….
এখন লকডাউনে বাচ্চাদের মনে আনন্দ দিতে এসব ছড়া গল্পের তুলনা নেই। এমন কিছু বই শিশু কে সুন্দর শৈশব দিতে পারে। শিশু কে সারাক্ষণ এটা করলে কেন? ওটা হলো কিভাবে? এসব না বলে বইয়ের গল্প নিয়ে কথা বলার সুযোগ হবে। হাসি আনন্দ হবার সম্ভাবনা থাকবে। শিশুর সুন্দর শৈশব মানে শিশু কে নিজের মত বেড়ে ওঠার একটা সুযোগ দেয়া। নিজের মত বেড়ে ওঠার জন্য যা করণীয় তা জানিয়ে দেয়া তবে না মুক্ত উপায়ে।যেহেতু তিন বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের না মুক্ত কথা বলার অভ্যাস আছে। এখন বড় বাচ্চাদের সাথে না মুক্ত থাকা সহজ হবে।
সম্প্রতি উদ্বেগের সাথে খেয়াল করলাম সম্ভবত আজকাল নতুন মায়েরা বাচ্চা কোলে নেয়া, খেতে দেয়া ব্যাপারগুলো ঠিক বুঝতে পারছেন না। ঘুম শেখাতে হয়/ শেখানো যায় এটাও তাদের অজানা।ফলে তাদের সংকট থেকেই যাচ্ছে।
নবজাতককে কোলে নিলে তার সমস্ত শরীরকে সাপোর্ট দিয়ে কোলে নিতে হবে। ঘাড়ে মাথা দিয়ে গ্যাস বের করতে হলে এক দিন থেকে দুই মাসের বাচ্চা কে ঘাড়ে রেখে বাম হাতের লম্বা অংশ পাছার নীচে দিতে হবে। তারপর আরেক হাত দিয়ে মাথাটা হাতের মুঠোয় ধরতে হবে। ফলে বাম হাত সম্পূর্ণ নবজাতকের মেরুদন্ড বরাবর থাকবে। তাহলে তাকে নিয়ে হেঁটে বেড়ানো সহজ হবে।
এখন ইউটিউব এ ভিডিও দেখে অনেক জানা যাবে। বাচ্চাদের যে কোনো সমস্যার জন্য এই ভিডিওগুলো খুব ভালো কাজ করে। আজকে আর লিখতে পারছি না। ইনশাআল্লাহ আবার আগামীকাল লিখব। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
লেখকঃ প্রবাসী লেখিকা, প্রাক্তন ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাক্তন শরীরচর্চা প্রশিক্ষক, শিশু প্রতিপালন বিশেষজ্ঞ ( প্যাডাগগ)