Ads

সঠিক পদ্ধতিতে সন্তান পালন

তামান্না সুলতানা

পরিবার এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে আমাদের জীবনের প্রথম শিক্ষা শুরু হয়।পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখা হয়,সেটাকে বলে পারিবারিক শিক্ষা। পারিবারিক শিক্ষা আমারা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি,তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক শিক্ষা জরুরি। আপনার সন্তানকে আপনার দেওয়া পারিবারিক শিক্ষাই তার ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গী, তাই সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলুন।

পরিবারে যেমন একে অপরকে সহযোগিতা করে ঠিক তেমনই বিপদে ঠেলে দিতে পারে। পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণ অন্যান্য সদস্যদের উপর প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে মা-বাবার আচার-আচরণ সন্তানের মনে অনেক বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।পারিবারিক কলহের জের ধরে, অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়।কেউবা আবার নেশা করা শুরু করে দেয়,এতে পারিবারিক অশান্তি আরও বেড়ে যায় ।

পরিবারে কয়েকজন সন্তান থাকা সত্ত্বেও, এক সন্তানকে মাত্রাতিরিক্ত সমর্থন, অন্য সন্তানদের মনে কষ্ট দিতে পারে সেটা অভিভাবকদের বুঝতে হবে। অনেক সময় বড় সন্তানের অন্যায় আবদার পূরণ করায় অন্যান্য সন্তানকে প্রভাবিত করতে পারে। পরিবারের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে প্রত্যেক সদস্যের মতামত নেওয়া দরকার।গণতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করুন, আপনার নেওয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত সন্তানদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিবেন না। নিজের সন্তানকে অন্যের সাথে কখনোই তুলনা করতে যাবেন না,এতে সে হীনমন্যতায় ভোগে।

একেকজনের লাইফস্টাইল একেকরকম সেটাও বুঝতে হবে,হতে পারে আপনার সন্তান অন্যদের থেকে আরও ভালো করতে পারে। সবসময় ওদের ভালো কাউকে দেখিয়ে বলবেন তুমি আরও ভালো কিছু করতে পারবে, এতে আপনার সন্তানদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। আপনার কোনো আচরণ বাচ্চার মনে প্রভাব পড়ছে কি-না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যাতে যেকোনো বিষয় আপনাকে আগে জানাতে দ্বিধাবোধ না করে। সন্তানদের জন্য আলাদা সময় বের করুন, তাদের মনের কথাগুলো ধৈর্য্য সহকারে শুনুন,তাদের যেকোনো অভিযোগ মাথায় রাখুন।

আপনি সন্তানদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করছেন কি-না নিশ্চিত হতে হবে।দাম্পত্য জীবনের দ্বন্দ্ব কলহের প্রভাব আপনার সন্তানদের উপর পড়তে দিবেন না,এতে তাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।জীবনের খারাপ অভিজ্ঞতা দিয়ে নয় ভালো অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের বুঝান, এতে তারা সাহসী হয়ে উঠে।

সন্তান পড়াশোনায় কোনো বিষয়ে অকৃতকার্য হলে বা কোনোকিছু না পারলে নিরুৎসাহিত করবেন না। সামনে ভালো কিছু হবে এই বলে তাকে উৎসাহ দিন।এতে ভবিষ্যতে সে আরও ভালো কিছু করতে পারবে। আপনার কথা মানছে না বা অন্য যুক্তি দেখাচ্ছে, তখন দয়া করে সেটা খতিয়ে দেখুন।

সন্তানকে বিশ্বাস করুন,কিন্তু কেমন বন্ধুদের সাথে মিশছে, বাইরে কী করছে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

সন্তানের টাকার উৎস কী এবং কোন কাজে টাকা ব্যয় করছে সেটা খেয়াল রাখুন।সন্তানের ক্যারিয়ার গড়ার প্রতিযোগিতা না করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। তাদের নিজের ক্যারিয়ার নিজেকেই তৈরি করতে সাহায্য করুন।শেষ বয়সে সন্তানরাই আপনার ভরসা, তাই সন্তানদের সাথে প্রতিযোগী নয় সহযোগী হিসেবে থাকুন।

লেখকঃ সাহিত্যিক ও কলাম লেখক 

আরও পড়ুন