Ads

বড়দের অনুকরণে শিশুরা যেভাবে খেলে

মনিরা ইসলাম

পাঁচ বছর বয়স হবার পর থেকে বাচ্চাদের প্রিয় খেলা “নাটক খেলা” খেলার নাম আসলে এটা না। পাঠক যেন বুঝতে পারে তাই একটা নাম দিলাম।এই খেলার অভানেতা অভিনেত্রী শিশু নিজে। গল্পকার কাহিনীকার সংলাপ সব তার ভাবনার ফসল।এই খেলায় সে খুব কর্তব্য পরায়ণ।তা যা ভূমিকা থাকে তেমন পারফর্ম করতে সে খুব মনোযোগী হয়।খেলাটা কমপক্ষে দুইজন খেলতে হয়। বন্ধু সংখ্যা বেশী হলে শিশু নিজেই বড় দল নিয়ে খেলার মত নাটক ঠিক করে।
এবার আসছি নাটক কেন।কারণ এই খেলায় শিশু কোনো না কোনোভাবে বাস্তব জীবনে যা দেখেছে তা করে। দুইজন শিশু সাধারণত পরিবার খেলা খেলে। সেখানে বাচ্চা হয় একটা পুতুল।নিষ্পাপ ভাবনায় তৈরী এসব গল্প খেলা কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখলে বড়দের সম্বন্ধে তাদের ধারণা খুঁজে পাওয়া যাবে।এটা ছেলে বাচ্চা কম‌ই খেলে।মায়ের শাড়ি ওড়না গায়ে পেঁচিয়ে সম্ভব হলে দু চারটা চুড়ি হাতে ঢুকালে খেলাটা বেশী জমে। এখানে হাড়ি পাতিল,ছোট চুলা, পুতুলের ছোট কোলবালিশ খুব উপকারী খেলনা। উপাদান যত বেশী ফ্যান্টাসী আর সৃজনশীলতা তত বিস্তৃত হয়।
ছেলে বাচ্চার খেলা চোর- পুলিশ ,ব্যাংকের ম্যানেজার, পোস্ট অফিস, দোকানদার আর দোকান ইত্যাদি।প্রয়োজনীয় যোগান থাকলে (কিছু কিছু খেলনার উপাদান দোকানে কিনতে পাওয়া যায়।যেমন: বাজারের ব্যাগ,তরকারী,ফল, কাগজের টাকা, খেলনা ক্যাশ কাউন্টার, টেলিফোন ইত্যাদি)।
করোনা সমস্যা যতদিন থাকুক না কেন জীবন তো চলবে।
শিশুর বিকাশের চাহিদা ঠিকভাবে পূরণ না হলে শিশু সেটার বলী হয়ে যাবে। শিশুকে সুন্দর জীবন দান করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।যে শিশু চঞ্চল তার অন্য কিছু ভালো লাগতে পারে। গভীর মনোযোগ দিয়ে না খেলতে চাইলেও খেলার মধ্য দিয়ে তাকে মনোযোগী করে তোলা যায়। সেক্ষেত্রে বাচ্চার টাইপ আর বন্ধুদের সংখ্যা জানা দরকার।
আমরা যখন সবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেছি তখন নাম দেশ ফুল ফল নদী খেলতাম। এই আইটেম গুলো বাচ্চারাই বাড়িয়ে কমিয়ে নেয়।আরো আছে কাগজ/ খাতায় কাটা( ক্রস)- গোল খেলা, শূন্য পূরণ করা খেলা।এখন যদিও কাগজ/ বোর্ড এর মান আগের মত নাই তবু লুডু বাসায় বসে খেলা যায় এমন একটা খেলা।ছাদে গোল গোল ঘর করে “একটা পয়সা দাও না” খেলা যায়।
শিশু বেড়ে উঠে।তবে শিশুর বিকাশ কে উৎসাহ দেয়ার জন্য তাকে আনন্দ পাবার মত পরিবেশ দিতে হবে। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ধীরে ধীরে পূর্ণ হয়ে ওঠে।তাই ইন্টারনেট নির্ভর খেলা বারো বছর হবার আগে না দেয়া ভালো।
লেখকঃ
জার্মানি প্রবাসী লেখিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী
ক্যম্ব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক
প্রাক্তন শরীরচর্চা প্রশিক্ষক
শিশু প্রতিপালন বিশেষজ্ঞ ( প্যাডাগগ)
আরও পড়ুন