Ads

আপনার সন্তানকে বন্ধু বানান

(প্রিয় বন্ধু এটি ত্রয়োদশতম পর্ব)

— নুরে আলম মুকতা

আমি তখন উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র। ছাত্র তো ছাত্রই !  আসলে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে যেগুলো নির্দিষ্ট সময়ে পেরিয়ে যাওয়া যায় না। আমি আর আমার ছোট বোন সময়ের সাথে লড়াই করছি তখন। দুর্দান্ত লড়াই। আম্মা আমাদের লড়াইয়ের বীর সেনানী চার ভাই বোন বাড়ির বাইরে। বড় আপাকে রনাঙ্গনের সেকেন্ড ইন কমান্ডই বলি। চাকুরি, নিজের ছেলেদের দেখাশোনা, আবার নিজের  স্বামী-সংসার ! কোনদিকে যাবেন ?  তারপরও প্রতিদিন আমাদের খোঁজ নেয়া। আম্মার কাছে রোজ আসা যাওয়া। চরম এক সময় অতিক্রম করছিলাম আমরা। সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সবাই ভুলে যায়। আমি কেন ভুলতে পারি না ! বার বার আমি ক্ষত বিক্ষত হই। খুঁজে ফিরি কোথাও কিছু দায় থেকে গিয়েছে কি না ?  আম্মা একদিন হঠাৎ বললেন, আমার বাম স্তনে একটি ফোড়ার মতো কি যেন বড় হচ্ছে ! ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যাচ্ছে। আপা ভালো করে পরখ করে বললেন, আমাকে দেখতে। আমি দেখার পর শরীর কাঁপতে শুরু করলো। স্থির হতে পারছিলাম না। ততদিনে আমার এক মামী মা স্তন ক্যান্সারে পরলোক পাড়ি দিয়েছেন। আম্মা আর আপা খুবই স্বাস্থ্য সচেতন ছিলেন। হাইজিনিক বিষয়গুলো এজন্য আমরা শিশুকাল থেকে অভ্যাস করি। দেরি না করে খুবই প্রিয়জন একজন সিনিয়র মেডিক্যাল প্রফেশনাল ডাঃ শ্রীধর কুমার বর্মনের কাছে গেলাম। দাদা আর বৌদি আম্মার দারুন প্রিয় ছিলেন। তাঁদের কাছে আমরাও দারুন ভালোবাসার পাত্র ছিলাম। বহুদিন যোগাযোগ নেই। বর্মন দাদা আর বৌদির কথা মনে হলে হৃদয় টাটায়। আম্মার বিষয়টি দাদা মনোযোগ দিয়ে শুনে বললেন, আমি তো সন্ধ্যায় ক্লিনিকে যাবো, তখন কাকী মা কে দেখে আসবো। ততক্ষণে যদি ব্যথা হয় এ ট্যাবলেট টি নিয়ে যাও। আজ দুপুরে খাবার পর দিতে পারো। আম্মা আমাদের ব্যথার কথা বলেন নি। তাই আমিও দাদাকে আম্মার ব্যথা বিষয়ে কিছু বলি নি। আমি কৃতজ্ঞ হয়ে অনুগত ভাই বাড়ি ফিরে আম্মাকে বললাম, ব্যথা কি আছে আম্মা ?  হায় আল্লাহ! মা আমার কত ব্যথা সয়েছে গো মাবুদ!
আম্মা বললেন, চারদিন থেকে ব্যথা বাবা। আমি তোমাদের বলি নি। এমনিতেই তো কত ওষুধ আনো তোমরা। আবার এটি বললে তোমরা তো ছটপট করবে। এজন্য সাতপাঁচ ভেবে বলি নি বাবা। কত আর খরচ বাড়াবো তোমাদের।


আমার চোখে তখন নোনা জল গন্ড বেয়ে পড়ছে। আস্তে করে কাঁধ বাঁকিয়ে মুছে নিলাম। আম্মা তখন হৃদযন্ত্রের মারাত্মক জটিলতায় ভুগছেন। কিন্তু বাইরে  সদা হাস্যজ্জ্বোল মুখ। হার্টের মাইট্রাল ভাল্ব চুপসে গিয়েছে উনার বোঝার উপায় নেই। সে যাত্রায় আম্মা বর্মন দাদার পরিচর্যায় একটি আ্যবসেস বা ফোড়া থেকে সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু কিছু সৃষ্টির বিস্ময় আমি অবলোকন করতে পেরেছিলাম। স্তনের গ্ল্যান্ড বা প্যাঁচানো দড়ির মতো দুগ্ধ নিঃসরণের শিরাগুলোর মধ্যে ক্ষত হবার কারনে তিন ইঞ্চি দূর দিয়ে পচনশীল আবর্জনা বেরিয়েছিলো। আমি অবাক হয়ে দেখেছিলাম বর্মন দাদার বিশেষ চিকিৎসা কৌশল, ড্রেসিং আর মা দের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। তিনি দেখিয়েছিলেন, ফ্যাটের মধ্যে কি বিস্ময়কর ভাবে জালিকা শিরাগুলো মায়ের নিপলের মুখের কাছে এসে উন্মুক্ত হয়েছে।  মা দের খুবই সাবধানী হতে হবে শোয়ার ক্ষেত্রে।

আমার চোখে তখন নোনা জল গন্ড বেয়ে পড়ছে। আস্তে করে কাঁধ বাঁকিয়ে মুছে নিলাম। আম্মা তখন হৃদযন্ত্রের মারাত্মক জটিলতায় ভুগছেন। কিন্তু বাইরে  সদা হাস্যজ্জ্বোল মুখ। হার্টের মাইট্রাল ভাল্ব চুপসে গিয়েছে উনার বোঝার উপায় নেই। সে যাত্রায় আম্মা বর্মন দাদার পরিচর্যায় একটি আ্যবসেস বা ফোড়া থেকে সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু কিছু সৃষ্টির বিস্ময় আমি অবলোকন করতে পেরেছিলাম। স্তনের গ্ল্যান্ড বা প্যাঁচানো দড়ির মতো দুগ্ধ নিঃসরণের শিরাগুলোর মধ্যে ক্ষত হবার কারনে তিন ইঞ্চি দূর দিয়ে পচনশীল আবর্জনা বেরিয়েছিলো। আমি অবাক হয়ে দেখেছিলাম বর্মন দাদার বিশেষ চিকিৎসা কৌশল, ড্রেসিং আর মা দের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। তিনি দেখিয়েছিলেন, ফ্যাটের মধ্যে কি বিস্ময়কর ভাবে জালিকা শিরাগুলো মায়ের নিপলের মুখের কাছে এসে উন্মুক্ত হয়েছে।  মা দের খুবই সাবধানী হতে হবে শোয়ার ক্ষেত্রে।

অযথা যেন বুকে নিয়মিত চাপ না লাগে। উপুড় হয়ে শোয়া যাবে না। মা দের এ কিশোর বয়স থেকেই এ বিষয়ে দয়া করে শিক্ষা দিন প্রিয় বন্ধু। বোঝানোর চেষ্টা করুন। সৌন্দর্য রক্ষা আর বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচার জন্য কিশোর বয়স থেকে সাবধান হতে হবে। খুব বেশি আঁটোসাটো বক্ষ বন্ধনী একনাগাড়ে ব্যবহারের জন্য দুগ্ধ নিঃসরণ কারী শিরাপথ কুঁচকে যেতে পারে। এজন্য মারাত্মক বিপজ্জনক পরিস্থিতির শিকার হয়ে গেলে কিছুই করার থাকবে না। অন্তর্বাস নোংরা বা একই অন্তর্বাস বার বার ব্যবহারের জন্য অদৃশ্য প্রাণঘাতি শত্রু ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া আর  ছত্রাক আক্রমন করতে পারে। স্তনের নিপলের কাছে খোলা ছিদ্র যা খালি চোখে আমরা দেখতে পাই না তা দিয়ে ভেতরে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এজন্য আমাদের মা দের বলুন, অতিরিক্ত ঘাম বা ভেজা যেন না থাকে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বার বার বলুন। এত বেশি বলুন যে, ওরা বিরক্ত বোধ করুক। তার পরেও বলুন। আমরা তো ওদের চিরহিত কর বন্ধু । ওদের শুভকামনা করি নিঃস্বার্থভাবে। তাহলে আমরা সর্বোচ্চ বেহায়া হতেও প্রস্তুত আছি।

১৭.০৭.২০২১
(চলমান)

আগের পর্ব- আপনার সন্তানকে বন্ধু বানান ১২

লেখকঃ সাহিত্যিক,শিক্ষক ও সহ-সম্পাদক,মহিয়সী।

আরও পড়ুন