Ads

তুরস্কে ভুতের নগরী ভরসা!

 ভাষান্তরঃ নুরে আলম মুকতা

বিস্ময়কর বিষয় হলো, তুরস্কে একটি নগরীর নাম VAROSHA “ভরসা” ! ইংরেজিতে যে বানানটি দেয়া হয়েছে তাতে বাংলা ভরসা ই উচ্চারিত হয়। আসুন আমরা জেনে নিই ভরসা কোথায়। এটি সাইপ্রাস আর তুরস্কের মাঝামাঝি একটি বাফার স্টেট বা অঞ্চল বলা যেতে পারে। গত মাসের কোন এক বৃহস্পতিবার প্রায় ষাট বছর আগে পরিত্যাক্ত এক ভুতুড়ে নগরী নতুন করে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তার্কিশ সাইপ্রিট প্রধানমন্ত্রী ইয়াসীন তাতার তাঁর মন্ত্রনা পরিষদের সাথীদের সাথে নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সাথে একটি যৌথ প্রেস কনফারেন্সে হাজির ছিলেন। ইয়াসীন তাতার বলেন, সাইপ্রাসের উত্তর অঞ্চলের এ আকর্ষণীয় এলাকাটি আমরা খুলে দিতে চাইছি। এলাকাটির প্রচীন নাম মারাস যা বর্তমানে ভরসা নামে সবাই চেনে। এ অঞ্চলটি নিয়ে রাজনৈতিক সমস্যা যদিও আছে। কিন্তু এটি তুরস্কের একটি উপনিবেশ হিসেবেই শাসিত হয়ে আসছে। এর বর্তমান প্রধান মন্ত্রী ইয়াসীন তাতারের সাথে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট একমত হয়ে শহরটি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এ এলাকাটিকে টারকিশ রিপাবলিক অব নর্দার্ন সাইপ্রাস সংক্ষেপে ( TRNC) বলা হয়। ভরসার অনেক পুরোনো পানির পাইপ লাইনের পুনরায় মেরামতের পর আবার চালু করা হয় একটি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। সেদিন তুরস্ক আর টি আর এন সির উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিগন আঙ্কারার প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সে উপস্থিত ছিলেন।

ভরসা একটি বিখ্যাত পর্যটন নগরী হিসেবে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে আছে একশত টি হোটেল যার শয্যা হিসেব করলে দাঁড়ায় প্রায় দশ হাজার। ১৯৭৪ সাল থেকে এগুলো পরিত্যাক্ত অবস্হায় পড়ে ছিলো। এ বছর তুর্কী সেনারা গ্রীকদের সংগে এক সংঘাতে জড়িয়ে গিয়েছিলো। ১৯৬৩ সালে তার্কিশ সাইপ্রিয়ট আর গ্রীক সাইপ্রিয়ট নিয়ে এক নৃতাত্ত্বিক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে দেশ দুটি। ফলশ্রুতিতে তুরস্ক এ অঞ্চলের মানুষকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভরসার আদি বাসিন্দাদের ঘরে ফিরে আসতে সাহায্য করে। ততদিনে নগরীটি ভূতুড়ে হয়ে গিয়েছে। একদম ফাঁকা ভুতুড়ে নগরী। গ্রীক সাইপ্রিয়ট ২০০৪ সালে আনান প্ল্যানের আওতায় ফিরে গিয়েছে। কিন্তু তার্কিশ সাইপ্রিয়ট আবার এর বিরোধিতা করেছে। এগুলো আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। আমরা ভরসা নাম নিয়ে বিস্মিত। কোন কালে কি কোন বাঙ্গালী নাবিক একাই ভরসা করে এখানে থেকে গিয়েছিলেন ! তার্কিশ ভরসা অঞ্চলে রয়েছে সমুদ্র বন্দর আর বিমানবন্দর। বিস্ময়কর ভুতুড়ে নগরী ভরসা হয়ত কোন এক বাঙ্গালী দুঃসাহসী নাবিকের নাম যিনি পাড়ি দিয়েছিলেন উত্তাল ভুমধ্যসাগর।

ডেইলী সাবাহ ;০৬.১০.২০২০ সংখ্যায় প্রকাশিত সংবাদের  ইংরেজি থেকে ভাষান্তর তথা ভাবান্তর 

আরও পড়ুন