Ads

আপনার সন্তানকে বন্ধু  বানান

০৯

(প্রিয় বন্ধু এটি নবম পর্ব)

– নুরে আলম মুকতা

চলুন বন্ধু আজ আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় সন্তানদের সবচেয়ে কাঙ্খিত বয়স থেকে আলোচনাটি শুরু করি। এ বয়স না এলে মানুষ মানুষ হয়না। পূর্নাঙ্গ মানুষ আমরা সবাই চাই। আমরা চাই আমার সন্তান সন্ততি মানুষের সমস্ত গুণাবলী অর্জন করুক। প্রস্ফুটিত হোক গোলাপের মতো। কিন্তু একটি জায়গায় আমরা মারাত্নক রকমের ভুল করে বসি। সেটা হলো প্রাকৃতিক বিষয়টিকে আমরা সরাসরি অস্বীকার করি। এখানে আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা কাজ করে। রক্ষণশীলতা তৈরি হয়,  না বোঝার কারনে। সামাজিক বিষয়গুলো এমনভাবে আমাদের মগজে আর মননে প্রবিষ্ট হয়ে আছে যে কিছু কিছু বিষয় আমরা একদম গোপন মনে করে নিয়ে বসে আছি। ধরেই নিয়েছি এটি অপ্রকাশ্য। আসলে প্রকাশ করা যাবে না ঐগুলো , যা আমার আপনার জীবন ও আইনকানুনের জন্য পরিপন্থি। অপ্রকাশ্য কি ? আপনি ওটা নির্দিষ্ট করুন। সন্তান লালন পালনের পক্ষে যায় আর তা না করলেই নয় এটি কেমন করে অপ্রকাশ্য ? আমি অনেক ভেবেছি। উত্তর জানা নেই। আপনিও খুঁজে দেখুন সদুত্তর পেলে জানাবেন।
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “বিশেষত তেরো চৌদ্দ বৎসর  বয়সের ছেলের মতো এমন বালাই আর পৃথিবীতে নেই”—(গল্পগুচ্ছ, ছুটি)। এখানে গুরু ছেলের কথা বলেছেন, মায়েদের কথা বলেননি। আমি যেমন সন্তানদের বন্ধু বানান বলছি। মায়েদের কথা আলাদা করে বলিনি। উভয়ক্ষেত্রে সন্তান সন্ততি ধরে নিতে হবে প্রিয় বন্ধু। আমরা আমাদের সন্তানদের পুষ্টি  নিশ্চিত করার জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছি। অধিক পুষ্টি কি করতে পারে তা পরে আলোচনা করা যেতে পারে। আজ প্রাকৃতিক বৃদ্ধি সামান্য হলেও আলোচনায় আসুক।
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “বিশেষত তেরো চৌদ্দ বৎসর  বয়সের ছেলের মতো এমন বালাই আর পৃথিবীতে নেই”—(গল্পগুচ্ছ, ছুটি)। এখানে গুরু ছেলের কথা বলেছেন, মায়েদের কথা বলেননি। আমি যেমন সন্তানদের বন্ধু বানান বলছি। মায়েদের কথা আলাদা করে বলিনি। উভয়ক্ষেত্রে সন্তান সন্ততি ধরে নিতে হবে প্রিয় বন্ধু। আমরা আমাদের সন্তানদের পুষ্টি  নিশ্চিত করার জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছি। অধিক পুষ্টি কি করতে পারে তা পরে আলোচনা করা যেতে পারে। আজ প্রাকৃতিক বৃদ্ধি সামান্য হলেও আলোচনায় আসুক।
আমাদের শরীরে ধারাবাহিক ক্রোমোজোমাল বংশগতির ধারা ক্রমান্বয়ে চলতেই আছে। চলবে অনন্তকাল। একদিন আব্বা আমাকে বলেছিলেন, তোমার হাত আর আঙ্গুলগুলো তোমার দাদার মতো। আমি তো তখন বুঝতে পারিনি এর বৈজ্ঞানিক কারন। এখন বুঝেছি এ অপরিহার্য বিষয়টি। আপনার সন্তানের আচরনগত সমস্যাগুলো সমালোচনা করার আগে নিজের দিকে তাকান। আপনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবেন ! আপনার আচরণগুলো আবর্তিত হচ্ছে সন্তান সন্ততির ভেতর। ওর আচরণের সামান্য পারিপার্শ্বিক প্রভাবকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বাঁকী সবটুকু বংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমরা এ প্রভাবক গুলোকে ডিএনএ বা বংশগতির বাহক বলি। RNA এ DNA কে সবগলো জৈবনিক কাজে প্রমোট করে। আলোচনা যাতে জটিল না হয় এজন্য আমরা সহজভাবে ধরে নিই ,  আমার আচরণগত বৈশিষ্ট্য অবধারিত ভাবে আমার সন্তানের শরীরে প্রবাহিত হচ্ছে। মহান সৃষ্টি কর্তা এ বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। তাহলে বিষয়টি আর জটিল থাকে না। বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকেরা জটিল বিষয়গুলো দেখুন।
চলুন আমরা নিজ নিজ সন্তানের দিকে তাকাই। WHO ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোর আর কিশোরী হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে। কিন্তু এখানে স্থানের জলবায়ু,পুষ্টি আর কৃষ্টি-কালচার বিবেচনায় নিতে হবে। বয়ঃসন্ধিকাল ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের আগে শুরু হতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি ১০ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে আর ছেলেদের ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হতে পারে। মেয়েদের এক থেকে দুই বছর আগে শুরু হয়। বয়ঃসন্ধি কালের প্রক্রিয়াটি চলে মেয়েদের ৯ থেকে ১৪ বছর আর ছেলেদের ক্ষেত্রে এটি ১০ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত। এটি চার বছরের মধ্যে পূর্নতা লাভ করতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রে এটি একটু ধীর গতিতে আবর্তিত হয়। মজার বিষয় হলো বয়ঃসন্ধির শুরুতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা ২ সেন্টিমিটার খাটো হয়। অদ্ভুত সব ঘটনা শরীর আর মন জুড়ে ঘটে যেতে থাকে প্রাকৃতিক নিয়মে। কিন্তু আশ্চর্য খুব কম বাবা মা এ বিষয়গুলোতে নজর দেন। নিজের বয়ঃসন্ধি কালের কথা এ সময় বিস্মৃত হওয়া যাবে না। প্রিয় বন্ধু দয়া করে নিজের জীবনের এ্যালবামে ফিরে যান। স্মৃতির পাতা দয়া করে একটু উল্টাতে থাকুন। তারপর নিজের সন্তান সন্ততির দিকে তাকান। যারা বয়ঃসন্ধিতে আছে তাদের কি আর Adolescence বা বয়ঃসন্ধিকাল পড়িয়ে লাভ হবে ?  যারা বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলেমেয়ে লালন পালন করেন তাঁদের এটি জানতে হবে।
(চলমান)
লেখকঃ সাহিত্যিক,শিক্ষক ও সহ-সম্পাদক,মহিয়সী।
আরও পড়ুন